বিডিপি নিউজ ২৪ ডটকম :
বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় একদিনে সর্বোচ্চ পরীক্ষা করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছে। নতুন শনাক্তের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৬০২ জন। এ নিয়ে শনাক্তের সংখ্যা ২৩ হাজার ৮৭০জনে দাঁড়াল। এছাড়া, এই সময়ে মারা গেছেন আরও ২১ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু ৩৪৯জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ২১২জন।
সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে করোনাভাইরাস সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা।
তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৪২টি ল্যাবে আগের সংগ্রহ করা নমুনাসহ ৯ হাজার ৭৮৮জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১৬০২ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এটি একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। এর আগে গত ১৫মে ১ হাজার ২০২জন শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে। আর গতকাল (১৭ মে) ১ হাজার ২৭৩ জনের শনাক্ত হয়েছিল। এ পর্যন্ত ১ লাখ ৮৫ হাজার ১৯৬ জনের করোনা পরীক্ষা করে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ২৩ হাজার ৮৭০ জনে।
এছাড়া এই সময়ে মৃত্যু বরণ করেছেন ২১ জন। এদের ৪ জন নারী ও ১৭জন পুরুষ। ঢাকা সিটিতে ৬ জন, ঢাকা জেলায় ২জন, গোপালগঞ্জ ১ জন, মুন্সীগঞ্জ ১জন, টাঙ্গাইল ১ জন, মানিকগঞ্জ ১ জন, নোয়াখালী ১ জন, চট্টগ্রাম জেলায় ২ জন, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে ২জন, ফেনী ২ জন, সিলেট ১জন ও বগুড়ায় ১ জন।
মৃতরা বয়স বিবেচনায় ১১-২০ বছরে মধ্যে ১ জন, ৩১-৪০ বছরের মধ্যে ২ জন, ৪১-৫০ বছরের মধ্যে ৬জন, ৫১-৬০ বছরের মধ্যে ৮জন, ৬১-৭০ বছরের মধ্যে ৫ জন।
তিনি আরও বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন সুস্থ হয়েছেন ২১২জন। এ নিয়ে মোট ৪ হাজার ৫৮৫জন সুস্থ হয়েছেন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থ হওয়ার হার ১৯.২১। আর মৃত্যুর হার ১.৪৬।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন আইসোলেশনে এসেছেন ২৩১জন। ছাড় পেয়েছেন ৯৬জন। আর বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৩হাজার ৩৮৩জন।
ব্রিফিংয়ে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে অধ্যাপক নাসিমা বলেন, তরল খাবার, কুসুম গরম পানি ও আদা চা পান করবেন। সম্ভব হলে মৌসুমী ফল খাবেন ও ফুসফুসের ব্যায়াম করবেন। এ সময় ধূমপান ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, এটি ফুসফুসের কার্যকারীতা নষ্ট করে দেয়।
চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী ভাইরাস করোনা বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ। সেদিন তিনজনের শরীরে করোনা শনাক্তের কথা জানিয়েছিল আইইডিসিআর।
এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। দিন দিন করোনা রোগী শনাক্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ায় নড়েচড়ে বসে সরকার।
ভাইরাসটি যেন ছড়িয়ে পড়তে না পারে সেজন্য ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয় সব সরকারি-বেসরকারি অফিস। কয়েক দফা বাড়ানো হয় সেই ছুটি, যা এখনও অব্যাহত আছে। ৭ম দফায় বাড়ানো ছুটি চলবে ৩০ মে পর্যন্ত।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার তথ্যানুযায়ী সোমবার সকাল পর্যন্ত করোনায় বিশ্বব্যাপী নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ১৬ হাজার ৬৭১ জনে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৪৮ লাখ ১ হাজার ৮৭৫ জন। অপরদিকে ১৮ লাখ ৫৮ হাজার ১৭০ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এর মধ্যে করোনাভাইরাস মহামারির কেন্দ্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রবিবার পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ লাখ ২৭ হাজার ৬৬৪ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৯০ হাজার ৯৭৮ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৪৬ হাজার ৩৮৯ জন।
Leave a Reply